paponblog

Wednesday, 22 August 2012

অনিবন্ধিত প্রতি সিমে ৫০ ডলার জরিমানা

বিটিআরসির সিদ্ধান্ত: অনিবন্ধিত প্রতি সিমে ৫০ ডলার জরিমানা

http://jantechaydesh.com/wp-content/uploads/2012/08/bd-Mobile-Companies-networks.png

অনিবন্ধিত সিম বিক্রি করলেই ৫০ ডলার জরিমানা গুনতে হবে মোবাইল ফোন কোম্পানিকে।  মোবাইল ফোনে অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আবদেনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) অবাধে সিম বিক্রির ওপর এমন শর্ত ও বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। আগামী ১২ই অক্টোবর থেকে এ নিয়ম কার্যকর করা হচ্ছে। বিটিআরসি, পুলিশ ও র‌্যাব সূত্রে জানা যায়- অপরাধীরা রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিম ব্যবহার করে। এ কারণে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়ন না। কারণ ওইসব নম্বরের কোন রেজিস্ট্রেশনই নেই। আর দু-একটি রেজিস্ট্রেশন পাওয়া গেলেও ঠিকানা ও ছবি সবই ভুয়া। সম্প্রতি এ ধরনের ৯৫টি সিম বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। সমপ্রতি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বেশিরভাগ সংস্থার পক্ষ থেকে আন রেজিস্টার্ড সিম বিক্রি বন্ধ করতে বিটিআরসির কাছে  একাধিকবার আবেদন জানিয়েছে। ওই আবেদনে সাড়া দিয়ে আগামী ১২ই অক্টোবরের পর সব প্রি-অ্যাকটিভেটেড সিম ও রিম (আগে থেকে চালু) বাজারে না দিতে নির্দেশ দিয়েছে বিটিআরসি। গত মঙ্গলবার বিটিআরসি থেকে সবগুলো মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছে এ নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ১২ই অক্টোবর থেকে কোন গ্রাহক কেনার সময় যে তথ্য দেবেন তা নিশ্চিত হয়েই সিমগুলো চালু করা হবে। কারও তথ্য ভুল থাকলে ওই সিম আর চালু হবে না। ওই সময়ের পর বাজারে কোন কোম্পানির প্রি-অ্যাকটিভ সিম পাওয়া গেলে তাকে প্রতিটি সিমের জন্য ৫০ ডলার বা সমমূল্যের টাকা জরিমানা দিতে হবে। বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানান, নিবন্ধন ছাড়াই সিম চালু করা যায় বলে অবৈধ ভিওআইপির কাজে অনেক সংযোগ ব্যবহার করা হচ্ছে। সমপ্রতি উত্তরা থেকে অবৈধ ভিওআইপির অভিযোগে আটক করা হয় ১৫ হাজারের বেশি সিম। এ জন্য গত মঙ্গলবার ছয় অপারেটরকে সোয়া ৬ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ বলেন, র‌্যাব ও পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে। নিবন্ধিত সিমে সঠিক তথ্য না থাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য নানা ধরনের সমস্যা হয়।  তাই চিঠি দিয়ে এখন তাদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নিবন্ধনের তথ্য যাচাই করে সংযোগ চালু করতে হবে অপারেটরদের। এজন্য ৯০ দিন সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল। এ সময় শেষ হচ্ছে ১১ই অক্টোবর। ফলে ১২ই অক্টোবরের পর থেকে প্রি-অ্যাকটিভেটেড সিম বিক্রি করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি। বিষয়টি মনে করিয়ে গত মঙ্গলবারও তাদের চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, গত ১১ই জুলাই বিটিআরসি কার্যালয়ে অপারেটরদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে প্রি-অ্যাকটিভেটেড সিম বিক্রি বন্ধে তিন মাস সময় বেঁধে দিয়েছিল নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। এ সময়ের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল তাদের। সে অনুযায়ী ১২ই অক্টোবরের পর কোনো অপারেটরের প্রি-অ্যাকটিভেটেড সিম ও রিম বাজারে পাওয়া গেলে প্রতিটি সিম বা রিমের বিপরীতে ৫০ ডলার জরিমানা করা হবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি। বিক্রির সময় যথাযথ প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন শেষে প্রতিটি সিম চালুর বিধান থাকলেও তা লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে সব অপারেটরের বিরুদ্ধে। বর্তমানে নিবন্ধন না করেও ব্যবহার করা যায় সংশ্লিষ্ট অপারেটরের সংযোগ। নিবন্ধনহীন সিম ব্যবহারের কারণে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাড়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি মাসুদুর রহমান বলেন, বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৮ মাসে ৯৫টি সিম বন্ধ করা হয়েছে। ওইসব সিমের রেজিস্ট্রেশন ভুয়া বলে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এসব সিম দিয়ে চাঁদা দাবি বা হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিটিআরসি থেকে অপারেটরদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সামপ্রতিক সময়ে মোবাইল ফোনে চাঁদা দাবি, হুমকি প্রদান, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ফোন ব্যবহার করে নানা ধরনের সন্ত্রাসী ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। নিবন্ধন ছাড়া সিম বিক্রি করায় এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচন কমিশন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও সেলফোন অপারেটরদের প্রতিনিধির সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে বিটিআরসি। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিবন্ধন নিশ্চিত না করে গ্রাহকের সংযোগ চালুর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিটিআরসির নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, অসম্পূর্ণ বা ত্রুটিপূর্ণ গ্রাহক নিবন্ধন তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট মোবাইল ফোন অপারেটর দায়ী থাকবে। নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেজ ব্যবহার উপযোগী না হওয়া পর্যন্ত ম্যানুয়াল ব্যবস্থায় এসব তথ্য যাচাই করে গ্রাহকের পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর সংযোগ চালু করতে হবে। আর নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজ ব্যবহার উপযোগী হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে প্রত্যেক অপারেটরকে অটোমেটেড কানেকশন অ্যাক্টিভেশন চালুর ব্যবস্থা করতে হবে।

No comments:

Post a Comment

free counters
^ Back ToTop