প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে সর্বাধুনিক কারিগরি দক্ষতা এবং সরঞ্জাম নিয়ে তৈরি হওয়া বিশালাকৃতির "টাইটানিক" জাহাজটি যাত্রার চতুর্থ দিনের মাথায় কিভাবে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে গিয়েছিল, সে রহস্য এখনো আমাদের কাছ
ে
অজানাই রয়ে গেছে। যদিও টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ নিয়ে গবেষণায়
বিজ্ঞানীরা বিশ্ববাসীকে এক এক সময়ে এক এক তথ্য জানিয়েছেন কিন্তু তারা কেউই এ
জাহাজ ডুবির কারণগুলো সম্পর্কে একমত হতে পারেন নি।
ফলে "টাইটানিক" আমাদের কাছে যেন কিংবদন্তীর মিথ। 'টাইটান' ছিল গ্রীক পুরানের সৃষ্টির শক্তিশালী দেবতা। যিনি শুধু সৃষ্টিই করেন। এই টাইটানের নাম অনুসারে জাহাজটির নাম রাখা হয়েছিল "টাইটানিক"। জাহাজটির আসল নাম ছিল, আর এম এস টাইটানিক। আর.এম.এস এর শব্দরূপ হচ্ছে রয়্যাল স্টিমার। সে হিসেবে জাহাজটি পুরো নাম দাড়ায় "রয়্যাল মেল স্টিমার টাইটানিক"। এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানছিল হল্যাণ্ডের "হোয়াইট স্টার লাইন।" টাইটানিক তৈরিতে সে সময় খবর পরেছিল ৭৫ লাখ ডলার। ১৯০৭ সাল থেকে জাহাজটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল আর শেষ হয়েছিল ১৯১২ সালে। জাহাজটির দৈর্ঘ্য ছিল ২৭৫ মিটার। আসন সংখ্যা ছিল প্রায় দুই হাজার এবং এর ওজন ছিল ৬০ হাজার টন। সে সময়ে এত বড় বিশালাকৃতির জাহাজ তৈরি করা মানুষের কল্পনার বাইরে ছিল। প্রকৃতপক্ষে এখনকার দিনে টাইটানিক জাহাজটি আকারে এত বড় ছিল যে, দেখতে এটিকে একটি ছোটখাট শহরের মত মনে হত, এতে করে কৌতুহলী মানুষের দৃষ্টি সবসময় এটির প্রতি নিবন্ধ থাকত। সে সময় জাহাজটির প্রথম শ্রেণীর যাত্রীদের ভাড়া ছিল ৩১০০ ডলার আর তৃতীয় শ্রেণীর ভাড়া ছিল ৩২ ডলার। প্রকৃতপক্ষে বৃটেন থেকে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে আমেরিকায় যাওয়া এই লম্বা যাত্রাপথ ছিল বেশ বিপদ সংকুল। ঝড়ঝঞ্ঝা পেরিয়ে নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করে সঠিক জায়গায় পৌঁছানো বেশ চ্যালেঞ্জের ব্যাপার ছিল। তারপরও বৃটেনের কিছু সমুদ্র প্রিয় মানুষসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ অধিকমূল্যে টিকেট ক্রয় করে টাইটানিকে চড়ে বসেছিল, তাদের উদ্দেশ্য ছিল টাইটানিক চড়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাত্রার মাধ্যমে একটি ইতিহাসের সাক্ষী হওয়া। টাইটানিকের অপারেটর ছিল বৃটেন-মার্কিন যৌথ কোম্পানী 'হোয়াইট স্টার'। ব্রিটিশ সরকারের নৌ নিরাপত্তা অধিদপ্তর "রোড অফ ট্রেড সেফটি" টাইটানিককে সমূদ্র যাত্রার ছাড় পত্র দিয়েছিল। ২২০০ যাত্রী এবং কয়েকশ জাহাজকর্মী নিয়ে ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কের দিকে যাত্রা শুরু করে টাইটানিক। যাত্রার প্রারম্ভে বিশ্বমিডিয়া টাইটানিককে নিয়ে বেশ মনোমুগ্ধকর গসিব তৈরি করে তা বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছিল আর মিডিয়ার বদৌলতে যেদিন টাইটানিক সাধারণ মানুষের কাছে এক স্বর্গীয় জিনিসে পরিণত হয়েছিল। বন্দর থেকে টাইটানিক ছাড়ার সময় লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। সবাই টাইটানিককে একপলক দেখেই যেন ধন্য হয়ে গিয়েছিল। বিশ্ববাসীর স্বপ্নের টাইটানিক সাইরেন বাজিয়ে ধীরে ধীরে সীমাহীন আটলান্টিকের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। যাত্রীরাও নাচ গান এবং আমোদপ্রমোদে ইতিহাসের এই সন্ধিক্ষণকে উপভোগ করতে লাগল। জাহাজটিতে সর্বোচ্চ বিলাস বহুল রাত্রি-যাপনের ব্যবস্থা ছিল। ফলে টাইটানিকের সকল যাত্রী প্রার্থিব ভোগ বিলাসে মত্ত থেকে অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। একএক করে ৩টি দিন তাদের ভালই কাটল কিন্তু চতুর্থ দিনের মাথায় ১৪ এপ্রিল ১৯১২ রাত ১০টায় উত্তর আটলান্টিকের কাছে পৌঁছতেই পানির নিচে সযত্নে লুকিয়ে থাকা শৈলখণ্ডের সাথে ধাক্কা খেয়ে কিংবদন্তীর টাইটানিক ধীরে ধীরে সমুদ্রের নীল জলে ডুবে যায়। এর সাথে সাথে জাহাজে থাকা ১৫১৩জন যাত্রীর সলীল সমাধি ঘটে। অপর্যাপ্ত লাইফ বোটের মাধ্যমে মাত্র ৬৮৭ জন যাত্রীর জীবন রক্ষা পেলেও তাদের পরবর্তী জীবন কেটেছিল ভয়ংকর দুঃস্বপ্নে। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে তথ্য প্রযুক্তি উৎকর্ষতার বদৌলতে বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদরা টাইটানিক জাহাজটি কখনোই পানিতে ডুববেনা বলে মন্তব্য করেছিল। কিন্তু সামান্য আইসবার্গেরআঘাতে এমন একটি শক্ত সামর্থ জাহাজ ডুবে যাওয়ায় বিশেষজ্ঞদের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এটিকে অনেকে অহমিকার কারণে ঈশ্বর প্রদত্ত অভিশাপ বলেও মত প্রকাশ করেছেন। টাইটানিক জাহাজ ডুবির ৭৩ বছর পর ১৯৮৫ সালে এর রহস্য উদঘাটনের জন্য একদল বিজ্ঞানী যন্ত্রচালিত অনুসন্ধান শুরু করেন। তারা জাহাজ ডুবিরস্থানে গিয়ে প্রায় ১৩০০০ মিটার পানির নিচে খুঁজে পান রাজকীয় জাহাজ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ। এ যেন অভিশপ্ত যেই রাত্রির দুসহ স্মৃতি নিয়ে এখনো পানির আড়াই মাইল নিচে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। টাইটানিক ডুবিতে যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কিনা সে রহস্য হযত আর কোন দিনও উদঘাটিত হবে না তবে এই ডুবি আমরা যে এখনো প্রকৃতিকে জয় করতে পারিনি সে কথায় আমাদেরকে প্রবলভাবে মনে করিয়ে দেয়। তা নাহলে টাইটানিক ডুবির আজ একশ বছর পরও কেন আমরা হাতরে খুঁজি_যেই দুস্বপ্নের রাতকে? কিংবদন্তীর টাইটানিক জাহাজ ডুবি বিষয়ে ইংরেজ কবি শেলি তার ওজিম্যানডিয়াস কবিতায় মত প্রকাশ করেছেন এভাবে_ "সমুদ্রের নীচে বালি, পলি, আর প্রবালের মৃতদেহের পাশে ছড়িয়ে আছে বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান ও প্রকৃতির অহমিকার শেষ চিহ্ন।"
ফলে "টাইটানিক" আমাদের কাছে যেন কিংবদন্তীর মিথ। 'টাইটান' ছিল গ্রীক পুরানের সৃষ্টির শক্তিশালী দেবতা। যিনি শুধু সৃষ্টিই করেন। এই টাইটানের নাম অনুসারে জাহাজটির নাম রাখা হয়েছিল "টাইটানিক"। জাহাজটির আসল নাম ছিল, আর এম এস টাইটানিক। আর.এম.এস এর শব্দরূপ হচ্ছে রয়্যাল স্টিমার। সে হিসেবে জাহাজটি পুরো নাম দাড়ায় "রয়্যাল মেল স্টিমার টাইটানিক"। এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানছিল হল্যাণ্ডের "হোয়াইট স্টার লাইন।" টাইটানিক তৈরিতে সে সময় খবর পরেছিল ৭৫ লাখ ডলার। ১৯০৭ সাল থেকে জাহাজটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল আর শেষ হয়েছিল ১৯১২ সালে। জাহাজটির দৈর্ঘ্য ছিল ২৭৫ মিটার। আসন সংখ্যা ছিল প্রায় দুই হাজার এবং এর ওজন ছিল ৬০ হাজার টন। সে সময়ে এত বড় বিশালাকৃতির জাহাজ তৈরি করা মানুষের কল্পনার বাইরে ছিল। প্রকৃতপক্ষে এখনকার দিনে টাইটানিক জাহাজটি আকারে এত বড় ছিল যে, দেখতে এটিকে একটি ছোটখাট শহরের মত মনে হত, এতে করে কৌতুহলী মানুষের দৃষ্টি সবসময় এটির প্রতি নিবন্ধ থাকত। সে সময় জাহাজটির প্রথম শ্রেণীর যাত্রীদের ভাড়া ছিল ৩১০০ ডলার আর তৃতীয় শ্রেণীর ভাড়া ছিল ৩২ ডলার। প্রকৃতপক্ষে বৃটেন থেকে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে আমেরিকায় যাওয়া এই লম্বা যাত্রাপথ ছিল বেশ বিপদ সংকুল। ঝড়ঝঞ্ঝা পেরিয়ে নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করে সঠিক জায়গায় পৌঁছানো বেশ চ্যালেঞ্জের ব্যাপার ছিল। তারপরও বৃটেনের কিছু সমুদ্র প্রিয় মানুষসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ অধিকমূল্যে টিকেট ক্রয় করে টাইটানিকে চড়ে বসেছিল, তাদের উদ্দেশ্য ছিল টাইটানিক চড়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাত্রার মাধ্যমে একটি ইতিহাসের সাক্ষী হওয়া। টাইটানিকের অপারেটর ছিল বৃটেন-মার্কিন যৌথ কোম্পানী 'হোয়াইট স্টার'। ব্রিটিশ সরকারের নৌ নিরাপত্তা অধিদপ্তর "রোড অফ ট্রেড সেফটি" টাইটানিককে সমূদ্র যাত্রার ছাড় পত্র দিয়েছিল। ২২০০ যাত্রী এবং কয়েকশ জাহাজকর্মী নিয়ে ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কের দিকে যাত্রা শুরু করে টাইটানিক। যাত্রার প্রারম্ভে বিশ্বমিডিয়া টাইটানিককে নিয়ে বেশ মনোমুগ্ধকর গসিব তৈরি করে তা বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছিল আর মিডিয়ার বদৌলতে যেদিন টাইটানিক সাধারণ মানুষের কাছে এক স্বর্গীয় জিনিসে পরিণত হয়েছিল। বন্দর থেকে টাইটানিক ছাড়ার সময় লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। সবাই টাইটানিককে একপলক দেখেই যেন ধন্য হয়ে গিয়েছিল। বিশ্ববাসীর স্বপ্নের টাইটানিক সাইরেন বাজিয়ে ধীরে ধীরে সীমাহীন আটলান্টিকের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। যাত্রীরাও নাচ গান এবং আমোদপ্রমোদে ইতিহাসের এই সন্ধিক্ষণকে উপভোগ করতে লাগল। জাহাজটিতে সর্বোচ্চ বিলাস বহুল রাত্রি-যাপনের ব্যবস্থা ছিল। ফলে টাইটানিকের সকল যাত্রী প্রার্থিব ভোগ বিলাসে মত্ত থেকে অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। একএক করে ৩টি দিন তাদের ভালই কাটল কিন্তু চতুর্থ দিনের মাথায় ১৪ এপ্রিল ১৯১২ রাত ১০টায় উত্তর আটলান্টিকের কাছে পৌঁছতেই পানির নিচে সযত্নে লুকিয়ে থাকা শৈলখণ্ডের সাথে ধাক্কা খেয়ে কিংবদন্তীর টাইটানিক ধীরে ধীরে সমুদ্রের নীল জলে ডুবে যায়। এর সাথে সাথে জাহাজে থাকা ১৫১৩জন যাত্রীর সলীল সমাধি ঘটে। অপর্যাপ্ত লাইফ বোটের মাধ্যমে মাত্র ৬৮৭ জন যাত্রীর জীবন রক্ষা পেলেও তাদের পরবর্তী জীবন কেটেছিল ভয়ংকর দুঃস্বপ্নে। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে তথ্য প্রযুক্তি উৎকর্ষতার বদৌলতে বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদরা টাইটানিক জাহাজটি কখনোই পানিতে ডুববেনা বলে মন্তব্য করেছিল। কিন্তু সামান্য আইসবার্গেরআঘাতে এমন একটি শক্ত সামর্থ জাহাজ ডুবে যাওয়ায় বিশেষজ্ঞদের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এটিকে অনেকে অহমিকার কারণে ঈশ্বর প্রদত্ত অভিশাপ বলেও মত প্রকাশ করেছেন। টাইটানিক জাহাজ ডুবির ৭৩ বছর পর ১৯৮৫ সালে এর রহস্য উদঘাটনের জন্য একদল বিজ্ঞানী যন্ত্রচালিত অনুসন্ধান শুরু করেন। তারা জাহাজ ডুবিরস্থানে গিয়ে প্রায় ১৩০০০ মিটার পানির নিচে খুঁজে পান রাজকীয় জাহাজ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ। এ যেন অভিশপ্ত যেই রাত্রির দুসহ স্মৃতি নিয়ে এখনো পানির আড়াই মাইল নিচে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। টাইটানিক ডুবিতে যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কিনা সে রহস্য হযত আর কোন দিনও উদঘাটিত হবে না তবে এই ডুবি আমরা যে এখনো প্রকৃতিকে জয় করতে পারিনি সে কথায় আমাদেরকে প্রবলভাবে মনে করিয়ে দেয়। তা নাহলে টাইটানিক ডুবির আজ একশ বছর পরও কেন আমরা হাতরে খুঁজি_যেই দুস্বপ্নের রাতকে? কিংবদন্তীর টাইটানিক জাহাজ ডুবি বিষয়ে ইংরেজ কবি শেলি তার ওজিম্যানডিয়াস কবিতায় মত প্রকাশ করেছেন এভাবে_ "সমুদ্রের নীচে বালি, পলি, আর প্রবালের মৃতদেহের পাশে ছড়িয়ে আছে বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান ও প্রকৃতির অহমিকার শেষ চিহ্ন।"
No comments:
Post a Comment